পূর্ব বর্ধমান : শুরু হয়েছে SIR, তার মধ্যেই উদ্ধার বস্তা বস্তা আধার কার্ড! বুধবার পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী-২ ব্লকের পিলা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ললিতপুর গ্রামে বস্তা বস্তা আধার কার্ড উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
স্থানীয় থেকে গিয়েছে, এদিন সকালে গ্রামের পাশের ললিতাবিলের পানা পরিষ্কার করার সময় শ্রমিকরা প্রথমে দু’টি বস্তা দেখতে পান। শ্রমিকরা সেই বস্তাগুলি জলে ফেলে দেন। পরে আরও একটি বস্তা দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয়। এরপর পারে টেনে বস্তার মুখ খুলতেই চোখ কপালে—ভিতরে রয়েছে প্রচুর আধার কার্ড!
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় ভিড় জমে যায়। কে বা কারা ওই আধার কার্ডগুলি ফেলে দিয়েছে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রবল রাজনৈতিক উত্তেজনা। এত সংখ্যক আধার কার্ড একসঙ্গে উদ্ধারের পর প্রশ্ন উঠেছে এগুলো নকল না আসল? কীভাবে এতগুলো কার্ড বিলে এল? খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পূর্বস্থলী থানার পুলিশ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভার বিধায়ক তপন চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, “এই আধার কার্ডগুলো কিন্তু বিলে পাওয়া যায়নি, বিল থেকে প্রায় অনেকটা দূরে পাওয়া গেছে। আগে কেউ ৫০০, কেউ ৭০০, ৮০০ টাকা দিয়ে আধার কার্ড করত। তারপর আমরা বলার পর পোস্ট অফিসে হত। এখন আর আধার কার্ড ডুপ্লিকেট হয় না। আমার মনে হচ্ছে এগুলো সব ডুপ্লিকেট কার্ড। আর যদি অরিজিনাল হয়, তাহলে এখানে ফেলা হবে কেন? যাদের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই, তারা এখানে থাকতে পারবে না – সেটা ওদের ভেবে দেখা উচিত। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টা করছেন যাতে একজন মানুষও এই রাজ্য ছেড়ে না যায়। কিন্তু SIR করেছে অমিত শাহ, উনি বলছেন ভারতবর্ষে ভাত কাপড় দিয়ে বসব না, চলে যাও!”
ঘটনায় সরব বিজেপি। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “শ্রমিকরা পুকুরে পানা পরিষ্কার করতে গিয়ে প্রায় তিন বস্তারও বেশি আধার কার্ড পেয়েছে। এই আধার কার্ডগুলো কার? কিভাবে এই পুকুরে এল? আমরা ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে এর উত্তর চাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগেই বলেছিলেন SIR পশ্চিমবঙ্গে কার্বলিক অ্যাসিডের মতো কাজ করবে। যেভাবে কার্বলিক অ্যাসিডে সাপ পালায়, তেমনই এখন SIR চালু হওয়ার পর অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা বাংলাদেশ ফিরে যাচ্ছে। আর এই রাজ্যে যারা তাদের সহযোগিতা করেছিল, নথি বানিয়ে থাকার সুযোগ দিয়েছিল, সেই তৃণমূল কংগ্রেস এখন ছটফট করছে, তাই আধার কার্ড পুকুরে ফেলে নথি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। বিজেপির দাবি, রাজ্যে যেন স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি হয় এবং এই চক্রের সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

