পূর্ব বর্ধমান : এবার বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যানকে তলব করল মহারাষ্ট্র পুলিশ। বর্ধমান পুরসভার চেক ব্যবহার করে প্রায় ১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য। তদন্তের প্রয়োজনে মহারাষ্ট্র পুলিশ পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকারকে ডেকে পাঠিয়েছে। বুধবার তাঁকে মহারাষ্ট্রের আর্থিক অপরাধ দমন শাখার দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে পুরসভার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসারকেও তলব করা হয়েছিল। তিনি ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের সামনে হাজিরা দিয়েছেন এবং তাঁর সইয়ের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। চেকে সই থাকা আরও এক আধিকারিককেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।
পুরসভার দুটি চেক ব্যবহার করে মহারাষ্ট্রের নাগপুর জেলার হিঙ্গনঘাটে অবস্থিত একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে মোট ১ কোটি ৪৫ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা তোলা হয়। চেক দুটি একটি স্বর্ণবিপণির নামে কাটা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি চেকে ৯৭ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা এবং অপরটিতে ৪৮ লক্ষ ২১ হাজার টাকা পেমেন্ট করা হয়। দুটি চেকেই চেয়ারম্যান, ফিনান্স অফিসার এবং এক্সিকিউটিভ অফিসারের সইয়ের মতো স্বাক্ষর রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, “চেকে সই থাকার জন্যই তদন্তকারী সংস্থা মিলিয়ে দেখতে ডেকেছে। আমরা তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করব। তবে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক অস্থায়ী পুরকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আর্থিক অপরাধ দমন শাখা। তাঁকে মহারাষ্ট্রে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং বর্তমানে তিনি বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। ব্যাঙ্কের তরফে দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয় এবং ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্র থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, এই ঘটনায় সরব হয়েছে বিজেপি। দলের নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “তৃণমূল মানেই দুর্নীতি। প্রায় দিনই তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে ইডির রেড হচ্ছে। এবার হয়তো দেখা যাবে কোনও কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে সোনা উদ্ধার হচ্ছে। সত্যিটা প্রকাশ পাক।”
ঘটনায় বর্ধমান পুরসভা চত্বরে শুরু হয়েছে তীব্র আলোড়ন। কর্মী ও কাউন্সিলরদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে, আর পুরসভার অন্দরে উঠছে নানা প্রশ্ন কীভাবে পুরসভার সরকারি চেক ব্যবহার করে এত বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হল?

