গণবন্ধু : একুশের জুলাই ধর্মতলার সভা থেকে দলীয় স্তরে নির্বাচনী সুর বেঁধে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার পরের দিন, মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে ঘোষণা করলেন নতুন সরকারি প্রকল্প— ‘আমার পাড়া, আমার সমাধান।’ উদ্দেশ্য, ছোটখাটো সমস্যা মেটাতে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া আরও তৃণমূল স্তরে। ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে জনসংযোগ বাড়াতে এবার এই নতুন প্রকল্পকে হাতিয়ার করল তৃণমূল সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “ছোট ছোট কাজের জন্য আমাদের নতুন প্রকল্প— আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান। মানুষকে বুথ ও গ্রাম স্তরেই সমাধান দিতে নামছে সরকার। এটা আপাতত ছোট আকারে শুরু হলেও পরে রাজ্যব্যাপী বিস্তৃত হবে। দেশের মধ্যে এধরনের উদ্যোগ এই প্রথম।”
তিনি জানান, রাজ্যের ৮০ হাজার বুথকে কেন্দ্র করে এই প্রকল্পে গড়ে উঠবে পরিষেবা শিবির। তিনটি বুথ নিয়ে গড়া হবে একটি কেন্দ্র। প্রতি সপ্তাহে একদিন করে প্রত্যেক কেন্দ্রে চলবে শিবির। ২ আগস্ট থেকে শুরু হবে এই উদ্যোগ। চলবে পরবর্তী ২ মাস। যদিও দুর্গাপুজোর সময় ১৫ দিনের ছুটি থাকবে। কাজের অগ্রগতি বজায় রাখতে অতিরিক্ত দিনও ধার্য করা হবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আর্থিক বরাদ্দও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতি বুথের জন্য বরাদ্দ ১০ লক্ষ টাকা। গোটা প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। রাজ্যস্তরে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে গঠিত হবে টাস্ক ফোর্স। একইভাবে জেলা স্তরেও টাস্ক ফোর্স গঠন হবে।
ক্যাম্পগুলিতে সারাদিন থাকবেন সরকারি আধিকারিকরা। গ্রামের মানুষজন তাঁদের কাছে সরাসরি জানাতে পারবেন নিজেদের এলাকার সমস্যার কথা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথায়, “গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে অনেক পরিষেবা পাওয়া গেলেও ছোটখাটো বহু কাজ থেকে যায়। এই প্রকল্পে সেই কাজগুলোও হবে। কোথাও আইসিডিএস সেন্টারের পাঁচিল তৈরি করতে হবে, কোথাও ছাদ মেরামতি— এমন ছোট কাজের সমাধান মিলবে ‘আমার পাড়া, আমার সমাধান’-এ।” সব কাজের নথিভুক্তি হবে অনলাইন পোর্টালে। স্বচ্ছতার সঙ্গেই প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিবার নির্বাচনের আগে জনকল্যাণমূলক প্রকল্প ঘোষণা করে ভোটের ময়দানে নেমেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘দিদিকে বলো’, ‘দুয়ারে সরকার’, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর পর এবার ‘আমার পাড়া, আমার সমাধান’। জনতার কাজের মাধ্যমেই ফের জনসমর্থন আদায় করতে চেষ্টার খামতি রাখছেন না জননেত্রী।

