গণবন্ধু : রাজনীতির ময়দানে প্রতীক শুধু একটি চিহ্ন নয়, তা হয়ে উঠেছে ভরসার প্রতীক বিশ্বাসের ভাষা। সেই ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতেই বারবার ফিরে আসে ফুল। কেউ ভরসা রাখছে পদ্মফুলে, কেউ ঘাসফুলে, কেউ ধানের শীষে, আবার কারও আশ্রয় গোলাপে। প্রশ্ন উঠছেই, সবারই কি ফুলের উপর এতটাই আস্থা? নাকি এই ফুলের রাজনীতির আড়ালে লুকিয়ে আছে আরও গভীর সমীকরণ?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রতীক আসলে দলের আদর্শ, ইতিহাস এবং ভোটব্যাংকের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত প্রতীক ভোটারের মনে একধরনের স্থায়িত্ব তৈরি করে। গ্রামবাংলার ভোটার হোক বা শহুরে মধ্যবিত্ত অনেকেই প্রতীকের মাধ্যমেই দলকে চিনে নেন। সেই কারণেই পুরনো ফুল ছেড়ে নতুন প্রতীকে ঝুঁকতে অনেক দলই দ্বিধায় থাকে।
তবে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজ্য রাজনীতিতে দেখা যাচ্ছে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত। ভাঙন, বহিষ্কার, নতুন দল গঠনের হাওয়া সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠছে, এই নতুন রাজনৈতিক শক্তিগুলি কি নতুন কোনও প্রতীকে ভরসা রাখবে? নাকি ভোটারের পরিচিত পুরনো ফুলই তাদের আশ্রয় হবে?
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, নতুন দল বা জোটের ক্ষেত্রে নতুন প্রতীক একদিকে যেমন আলাদা পরিচিতি তৈরি করতে পারে, তেমনই তা ঝুঁকিরও। কারণ, প্রতীক অপরিচিত হলে ভোটার বিভ্রান্ত হতে পারেন। আবার অন্যপক্ষের দাবি, নতুন ফুল বা নতুন চিহ্নই বদলের বার্তা দিতে পারে, যা বর্তমান রাজনৈতিক ক্লান্তির আবহে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলতে পারে।
সব মিলিয়ে স্পষ্ট, বিধানসভা ভোটের আগে শুধু প্রার্থী বা ইস্তাহার নয়, প্রতীক নিয়েও চলবে জোর রাজনৈতিক অঙ্ক কষা। শেষ পর্যন্ত ভোটার কি পুরনো ফুলেই ভরসা রাখবেন, না কি নতুন কোনও ফুলে দেখবেন পরিবর্তনের স্বপ্ন তার উত্তর মিলবে ব্যালট বাক্স খুললেই।

