পূর্ব বর্ধমান :: “এতবার শিল্প সম্মেলন হলেও রাজ্যে বাস্তবে কোনও শিল্প আসেনি। শুধু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কাজের সুযোগ তৈরি না হওয়ায় মানুষকে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যেতে হচ্ছে। শিল্পায়নের জন্য যে সুস্পষ্ট নীতি দরকার, তা রাজ্যে নেই। যেখানে চুরিই মূল নীতি, সেখানে শিল্প নীতি হতে পারে না। চুরি আর শিল্প পাশাপাশি চলতে পারে না,” রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্প সম্মেলন নিয়ে বর্ধমান এসে এমনই মন্তব্য করলেন সিপিআইএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জী। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমান জেলার সিআইটিইউ-র ১২তম জেলা সম্মেলন উপলক্ষে দেওয়ানদীঘিতে অনুষ্ঠিত প্রকাশ্য সমাবেশ থেকে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন সিপিআই(এম) নেত্রী কমরেড মীনাক্ষী মুখার্জী। এদিনের সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গোটা বিষয়টিই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একের পর এক কারখানা বন্ধ করে এবং সম্পদ জলের দরে বিক্রি করে সাধারণ মানুষের রুটি-রুজির দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হয়ে সরকার অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করছে বলে তাঁর অভিযোগ।
রাজ্যে ভুয়া সংস্থার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে, বিশেষ করে মেমারির সাম্প্রতিক ঘটনার উল্লেখ করে মীনাক্ষী মুখার্জী বলেন, সরকার যখন নিজেদের দায়িত্ব থেকে হাত গুটিয়ে নেয়, তখনই এই ধরনের চোর-জোচ্চোরেরা সক্রিয় হয়ে ওঠে।
কাটোয়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জমি অধিগ্রহণ হওয়ার পরেও প্রকল্পটি পড়ে রয়েছে। তাঁর মতে, তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের কাটমানির দৌরাত্ম্য এবং অপদার্থ প্রশাসনিক ব্যবস্থার নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়েছে কাটোয়ার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। তিনি দাবি করেন, রাজ্যজুড়ে খেটে খাওয়া মানুষ ও শ্রমিকরা লাল ঝান্ডার তলায় ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে এবং আন্দোলনের মাধ্যমেই ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ফের উৎপাদন শুরু হবে।
আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর রানাঘাট সফর নিয়েও কড়া সমালোচনা করেন মীনাক্ষী মুখার্জি। তাঁর বক্তব্য, এই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জন্য ইট পেতে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার। যতবার ইলেকশনের আগে এসেছে ততবারই উস্কানিমূলক এবং দাঙ্গা মুলক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এটা বলতে তো আসবে না যে তিন বছরের কাজ বাকি আমি ১০০ দিনের টাকা দিতে এসেছি। মিডডে মিল, আইসিডিএস যে শূন্য পথ গুলো আছে সেগুলো কি পূরণ করার জন্য উনি আসবেন? উনি এসে বলবেনটা কি আর করবেন টা কি! উনি আসবেন রাজনীতি করতে এই পশ্চিমবঙ্গে এতদিন হিন্দু-মুসলিম-নমঃশূদ্র-মতুয়া মাহাত্ম্য সবাই পাশাপাশি থাকতো এখন উনি আসবেন সবার মধ্যে লাঠালাঠি করাতে দাঙ্গা করাতে আগুন লাগাতে।
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মেসি কাণ্ডের অনুষ্ঠানে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, মেসিকে নিয়ে সরকার যে ব্ল্যাকে টিকিট বিক্রি করতে পারে জানতাম না। ছোটতে শুনেছিলাম ভালো সিনেমা এলে যারা সব চোর থাকে তারা তাদের টিকিট ব্ল্যাক করে। আর একটা ভালো খেলোয়াড় এলো তৃণমূল এটাকেও ছাড়লো না। ব্ল্যাক এর টিকিট বিক্রি করে আর কুড়ি টাকার জলকে ২০০ টাকায় বিক্রি করে ভালো পয়সা কামালো এই পয়সাটা কবে ফেরত হবে সেটাই বলুক।
সবশেষে মীনাক্ষী মুখার্জী অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার বাংলা ডিয়ার লটারি ও মদের দোকান খুলতেই বেশি আগ্রহী, পাশাপাশি বেআইনি নির্মাণকেও প্রশ্রয় দিচ্ছে।

