Wednesday, November 19, 2025
Homeকলকাতাসম্ভাবনা না কি গুজব? বিজেপিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়! বেহালা পশ্চিমে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত

সম্ভাবনা না কি গুজব? বিজেপিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়! বেহালা পশ্চিমে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত

গণবন্ধু : প্রায় ৩ বছর ৩ মাস পর জেলমুক্ত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘদিন জেলে থাকার জেলমুক্ত হয়েই তিনি ফের রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। জেল থেকে বেরিয়ে পার্থবাবু দাবি করেছেন যে, “তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ এবং তাঁর রাজনীতিতে ফিরে আসা এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।”

কিন্তু, তাঁর এই আত্মবিশ্বাসী প্রচারের মধ্যেই কালীঘাটের বার্তা স্পষ্ট যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনও সাসপেন্ডেড এবং তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে দলে ফেরাবে না।

যদিও তৃণমূল সূত্রে খবর, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হওয়ার পর যে ৬ বছরের সাসপেনশন কার্যকর হয়েছিল, তা এখনই তোলার প্রশ্নই ওঠে না। বরং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলের কোনও নেতা বা কর্মী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক রাখবেন না। দলের এক শীর্ষ নেতার ভাষায়, “ওঁর ছায়াও দল মাড়াবে না।”

যদিও এই অবস্থাতেই নিজের পুরনো রাজনৈতিক ঘাঁটি অর্থাৎ বেহালা পশ্চিমে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, “বেহালা পশ্চিমের মানুষ আমাকে পাঁচবার নির্বাচিত করেছেন। যদি দোষী হতাম, তারা কি আমাকে ভোট দিতেন?”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তার এই চিঠি পরিষ্কার ইঙ্গিত দিচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আবার প্রার্থী হতে চান। তাঁর লক্ষ্য, বেহালা পশ্চিম থেকেই রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন।

তবে কালীঘাটের সিদ্ধান্ত তার সম্পূর্ণ বিপরীত। তৃণমূল তাঁকে দলে ফেরাবে না, প্রার্থীও করবে না – এটা এখন প্রায় নিশ্চিত। ফলে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা, পার্থ চট্টোপাধ্যায় কি তাহলে বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন?

একসময় বেহালা পশ্চিমে তাঁর প্রভাব ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী। ২০২১ সালের নির্বাচনে তিনি পেয়েছিলেন ১,১৪,৭৭৮ ভোট, যা মোট ভোটের প্রায় ৪৯ শতাংশ। ফলে প্রশ্ন উঠছে যে, এই ভোটব্যাঙ্ক কি এবার পার্থবাবুর সঙ্গে বিজেপির দিকে যেতে পারে?

সম্ভাবনা না কি গুজব? বিজেপিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়! বেহালা পশ্চিমে শুরু জোর জল্পনা :

রাজনৈতিক মহলের খবর, বিজেপির ভেতরেও এই সম্ভাবনা নিয়ে হিসেব-নিকেশ শুরু হয়েছে। একাংশের মতে, বেহালা পশ্চিমে একজন পরিচিত মুখের প্রয়োজন হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় হতে পারেন দলের স্ট্রাটেজিক পছন্দ। তবে অন্য পক্ষের মত, দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত এক নেতাকে দলে নেওয়া বিজেপির ভাবমূর্তির জন্য ঝুঁকিপূর্ণও হতে পারে।

তবু একটি বিষয় পরিষ্কার পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজেকে আড়ালে রাখছেন না। বরং প্রমাণ করতে চাইছেন, তিনি এখনও প্রাসঙ্গিক, জনপ্রিয় এবং লড়াইয়ে প্রস্তুত। তাঁর কথায়, “বেহালার মানুষ আমার শক্তি। আমি ফিরে আসব।”

এখন রাজনৈতিক মহলের একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, এই প্রত্যাবর্তনে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোন দলের পতাকায় দাঁড়াবেন? তৃণমূলের দরজা আপাতত বন্ধ, তাই চোখ এখন বিজেপির দিকেই। শুধু সময়ের অপেক্ষা, রাজনীতির অন্দরে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় আবার সেই রাজনীতির হাই ভোল্টেজ কেন্দ্রে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments