Friday, December 26, 2025
Homeকলকাতা২১ জুলাইয়ের আগেই উধাও বাস, দুর্ভোগ যাত্রীদের

২১ জুলাইয়ের আগেই উধাও বাস, দুর্ভোগ যাত্রীদের

পূর্ব বর্ধমান : ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ ঘিরে কার্যতঃ শূন্য সড়কপথ। অধিকাংশ বেসরকারি বাস আজ নেই রাস্তায়। কোথায় গেল সেগুলি? কে উঠিয়ে নিল? সকলেই জানে উত্তর, তবুও নীরবতার জাল। বছরের পর বছর ধরে একুশে জুলাই এলেই এই চিত্র। সমস্যার সুরাহা নেই, যাত্রীদের দুর্ভোগও কমছে না। গন্তব্যে পৌঁছাতে বাসস্ট্যান্ডে এসে বাস না পেয়ে বেশি কড়ি খরচ করে টোটোয় করে ফিরতে হচ্ছে।

রবিবার পাশকুড়া-বর্ধমান রুটের এক বাসকর্মী জানালেন, “আগে থেকেই বেশিরভাগ বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি বাস চলছে। তাও আমরা রুটবোর্ড খুলে, ‘রিজার্ভ বাস’ বলে চালাতে বাধ্য হচ্ছি। রুটের বাস জানলে আটকাবে, কাল আবার বলবে লাগবে না। তাই এই ব্যবস্থা। এমনি এক দৃশ্য দেখা গেল আলিশা বাসস্ট্যান্ডে।”

এদিকে বর্ধমানের বিভিন্ন বেসরকারি বাসে টাঙানো রয়েছে আইএনটিটিইউসি-র পোস্টার, যাতে লেখা: ‘২১ জুলাইয়ের জন্য এই বাসটি বুকিং করা হল’। অর্থাৎ বাস কোথায় গেল, তা লুকোনোর অবকাশ নেই।

বাসযাত্রীদের প্রশ্ন, “একুশে জুলাই একটা বাস্তব ঘটনা। কিন্তু, সাধারণ মানুষের সমস্যাটাও তো বাস্তব। এতবছর পরও কেন তার সমাধানে কোনও পরিকল্পনা হবে না?”

শুধু আজ নয়, গত দুই-তিনদিন ধরেই রাস্তায় বাসের সংখ্যা কমেছে। আজ পরিস্থিতি আরও খারাপ। পূর্ব বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর এলাকা দিয়ে সাধারণত সবচেয়ে বেশি বাস চলে। আজ রায়না, খন্ডঘোষ, জামালপুর, আরামবাগ, তারকেশ্বর, মেদিনীপুরগামী বাস কার্যতঃ উধাও। কালনা, মন্তেশ্বর, কাটোয়া, মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, দুর্গাপুর, আসানসোল রুটেও একই ছবি। যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে। বাধ্য হয়ে কেউ অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ছোট গাড়ি ভাড়া করছেন, কেউ দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও পাচ্ছেন না বাস। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন গরিব-মধ্যবিত্ত যাত্রীরা।

বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রর প্রশ্ন, “যেখানে ধর্মঘট করলে সরকারি কর্মীদের বেতন কেটে নেওয়া হয়, সেখানে এই পরিস্থিতিতে কর্মীরা অফিসে যাবেন কীভাবে? তৃণমূল কংগ্রেস ২১ জুলাইয়ের নাম করে সারা রাজ্যের পরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে। এর জন্য ওদের ধিক্কার জানাই।”

যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি, মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “বেশিরভাগ মানুষ ট্রেনে যায়। কয়েকটা বাস ভাড়া করা হতে পারে। তবে আগে থেকেই কোনো বাস জবরদস্তি তুলে নেওয়া হয়নি।”

বাস আছে, কিন্তু নেই—এই বাস্তবতায় বিপাকে গোটা রাজ্য। একুশে জুলাইয়ের উদযাপন, আর সাধারণ মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ—এই দ্বন্দ্বে আটকে রাজ্যের সড়কপথ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments